প্রত্যয় ডেস্ক, বদরুল ইসলাম বিপ্লব, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: হিমালয় কন্যা খ্যাত জেলা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে শীত পড়তে শুরু করেছে। শীত নিবারনে গরম কাপড় হিসেবে লেপের চাহিদাও বেড়েছে। তাই লেপ তোষক তৈরীতে দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। এদিকে প্রচন্ড শীতে এ জেলার কোন মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেজন্য তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসন।
প্রতিবছর নভেম্বর মাস থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের প্রভাব শুরু হয়। এ বছরও ইতোমধ্যে শীত পড়তে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনের তেতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে বাতাসের আদ্রতা ১২-১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠানামা করছে। তাই শীত থেকে নিজেদের রক্ষার জন্য লেপ ও তোষক তৈরীর জন্য ছুটছেন তুলার দোকানে। এদিকে লেপ তোষকের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে ব্যস্ত সময় পার করছেন লেপ তোষকের কারিরগররা। ক্রেতারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিটি লেপ ও তোষকের দাম বেড়েছে। আর বিক্রেতা বলছেন, কাপড় তুলা ও মজুরী বাড়ার কারনে দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে সেটাও ভোক্তাদের নাগালের মধ্যে।
শহরের কালিবাড়ি তুলা ঘরের কারিগর আবুল কাশেম জানান, তিনি গত ৪০ বছর ধরে লেপ তৈরীর কাজ করছেন। কারিগররা দিনে ৬ থেকে ৮ টা পর্যন্ত লেপ তৈরী করছেন। এবার কাজের চাপ বেশি হওয়ায় সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে।
কারিগর সুমন ইসলাম জানান, অন্যান্য মৌসুমে দিনে ২ থেকে ৩টি করে লেপ তৈরীর কাজ পাওয়া গেলেও বর্তমানে শীতের আগমনে দিনে ১২ থেকে ১৭ টা পর্যন্ত লেপ সেলাইয়ের কাজ হয় তাদের।
কারিগর আইনুল হক জানান, এখানে, কার্পাস, পলি, শিমুলসহ বিভিন্ন প্রকার তুলা পাওয়া যায়। কার্পাস তুলাটি লেপ তৈরীর জন্য সব থেকে ভালো। কার্পাস তুলাটির বর্তমান বাজার মূল্য ২০০ টাকা কেজি।
কালিবাড়ি তুলা ঘরের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মমিন জানান, গতবার নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের তুলনায় এবার নভেম্বর মাসে তুলনামূলক ভাবে লেপের বিক্রি বেড়েছে। তবে গতবারের তুলনায় এবার বিভিন্ন প্রকার তুলা ও কাপড় অনুযায়ী লেপ প্রতি দাম বেড়েছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। বর্তমানে বিভিন্ন মাপের লেপ বিক্রয় হচ্ছে ১ হাজার ২’শ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।
অন্যদিকে মিন্টু তুলা ঘরের স্বত্বাধিকারী মিন্টু জানান, এবার হঠাৎ করে আগাম শীত শুরু হওয়ায় ক্রেতার চাপ বেড়েছে। এতে কারিগররাও অনেক রাত পর্যন্ত কাজ করছেন বিধায় তাদের একটু কষ্ট হচ্ছে। বর্তমানে লেপ তৈরীর বিভিন্ন মালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় লেপের দামও একটু বেশি।
এ ব্যপারে পঞ্চগড়ের তেতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানান, এ বছর মওসুমের শুরুতে আদ্রতা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। কাজেই দিন যতই যাবে বাতাসের আদ্রতা ততই কমবে। সেই সাথে বাড়বে শীতের তীব্রতা।
শীতের তীব্রতা থেকে ছিন্নমূল মানুষকে সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসন কাজ করছে। জেলা প্রশাসক ড. কামরুজ্জামান সেলিম জানান, প্রচন্ড শীতে যেন এ জেলার কোন মানুষ কষ্ট না পয় সেজন্য ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন তৎপর রয়েছে। ইতোমধ্যে ২৫ হাজার ৮শ কম্বল পাওয়া গেছে। এছাড়াও আরো এক লক্ষ পিস কম্বলের চাহিদা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।